জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় শাহাদাৎ ফরাজী শাকিব (৩৫) জামিন পেয়েছেন।
সোমবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় তিনি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন।
এর আগে, তাকে গ্রেপ্তারের পর পাহাড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তার মুক্তির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে ওঠেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা। পার্বত্য নিউজের সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ, ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, আমজনতা পার্টির নেতা তারেক খানসহ অনেকে তার মুক্তির দাবি জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালান।
মুক্তির পর শাহাদাৎ ফরাজী শাকিব পার্বত্য নিউজকে জানান, “আমি প্রতারণার শিকার হয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলাম। জামিন পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ হলো, এটি একটি ষড়যন্ত্র, এবং কারা এর পেছনে জড়িত তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমরা একবার নয়, হাজারবারও জেলে যেতে প্রস্তুত। আদিবাসীর স্বীকৃতির আড়ালে যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা কখনোই সফল হতে দেওয়া যাবে না। যদি এই ষড়যন্ত্র থামানো না যায়, তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম একদিন আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হবে।”
এছাড়া, তাকে মুক্তির দাবিতে যারা পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।
*সংঘর্ষের পটভূমি*
গত ১৫ জানুয়ারি এনসিটিবি ভবনের সামনে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামের একটি সংগঠন পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করে।
অন্যদিকে, ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী এনসিটিবির সামনে গিয়ে পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে কর্মসূচি পালন করে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়, যেখানে বেশ কয়েকজন আহত হন।
এই ঘটনার জেরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ গত ১৭ জানুয়ারি একটি মামলা দায়ের করে, যেখানে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।